+8801303535373
No products in the cart.
বাতাসে ভেসে আসে শব্দের চাঁদ,
মেঘের কণ্ঠে বাজে কোরআনের আয়াত।
একটি পাথর ফেটে বের হয় রক্তের ফুল,
যেখানে শিশুরা শিখে নেয়
অক্ষরের বদলে শোকের ধ্বনি।
মিনাল মুমিনীনা রিজাল—
যেন আকাশ-ভাঙা গম্বুজ থেকে
ঝরে পড়া বজ্রের টুকরো,
পৃথিবীর কানে ঢুকে যায় রক্তাক্ত সত্য:
“তাদের কেউ শেষ করেছে প্রতিশ্রুতি,
আর কেউ এখনো অপেক্ষমাণ।”
আবু উবায়দার কণ্ঠ—
অচেনা অথচ চিরপরিচিত,
সাহাবার ছায়ার মতো দাঁড়িয়ে থাকে ধ্বংসস্তূপের মাঝে।
তার শব্দ মাটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে জাগ্রত করে শহীদদের বাগান।
বাতাসে ভেসে যাওয়া মুহাম্মদী সনদের মতো,
প্রাচীর ও ড্রোনের কংক্রিট ভেদ করে পৌঁছে দেয়
উম্মাহর শিরায় আল-ফাতহের প্রতিশ্রুতি।
আজ থেমে গেছে সেই কণ্ঠ,
কিন্তু প্রতিধ্বনি ধ্বনিত এখনও;
শিশুর ঠোঁটে উঠে আসে ছন্দ,
শোকের ভেতর জন্ম নেয় সিজদাহর রিদম।
ইসমাইল, ইয়াহইয়া, উবায়দা—
নামগুলো আকাশের কৃষ্ণচূড়ায় ঝুলে,
লাল শালুকের গন্ধে জেগে ওঠে মৃত শহর।
তারা চলে গেছে,
কিন্তু প্রত্যাবর্তনের দরজা খুলে রেখেছে
প্রতিটি মুসল্লার হৃদয়ে।
ফিলিস্তিন—
এক মুক্ত কোরআন-পাতা,
যার আয়াত লেখা হচ্ছে রক্তের কালি দিয়ে।
প্রতিটি শহীদ একেকটি জীবন্ত সুন্নাহ,
প্রতিটি মায়ের নিঃশ্বাস—
একেকটি বহমান হাদিসের ইসনাদ;
যেখানে ধ্বংস নয়—সংরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষ্য।
বোমার আলোয় গাজার রাত
মিলিয়ে যায় বদরের আকাশের সঙ্গে।
শিশুদের হাতে পাথর রূপ নেয় সাহাবার তরবারিতে।
শত্রুর ট্যাঙ্কের গর্জন
মিইয়ে যায় শহীদদের “আল্লাহু আকবার”-এর সুরে।
গাজার ভাঙা ইটগুলো মৃত সৈনিকের বুকে চাপড় দেয়।
অশ্রুর বদলে গলিত আগুন ঝরে পড়ে
শিশুদের চোখ থেকে।
এ আগুনে লোহা নরম হয়ে গলে যায়;
কিন্তু ইমান হয়ে ওঠে পাথরের চেয়েও কঠিন।
শিশুরা কাঁদে না—
খেলনার স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে
মায়ের কোলে তুলে ধরে রক্তমাখা বিজয়পত্র।
গাজার রঙ এখন লাল ও সবুজ,
যেন মহা প্রলয়ের আগমনী দৃশ্য।
আকাশে উঠে যায় নাম—
মুহাজ্জাব,
মুত্তাকী,
মুজাহিদ;
আর পৃথিবী কেঁপে ওঠে,
মিনারের সিজদাহর ধ্বনিতে প্রতিধ্বনিত হয়ে।
শাহাদাত—
তুমি কেবল একটি মৃত্যু নও,
তুমি স্বপ্নদ্বার,
যেখান থেকে শহরগুলো মুক্তির আলোয় ভরে ওঠে।
তুমি সেতু,
যেখানে কাঁদতে থাকা জননী
এক হাতে মুছে নেয় অশ্রু,
অন্য হাতে আঁকড়ে ধরে কুরআনের আয়াত।
আবু উবায়দা প্রথম ভাগে যুক্ত হলেন;
আমরা বাকি যারা—
অপেক্ষমাণ এক বিশাল সারি,
যেখানে হৃদয় লালন করছে শহীদের ডানা।
আজ রক্তে লেখা,
শহীদের ডানায় উড়ে বেড়ায়
মৃত্যুকে হাসিমুখে বরণ করা উম্মাহর
অদৃশ্য নিশান।
আহ্ ফিলিস্তিন,
তোমার রক্তের নদী একদিন
মিশে যাবে সমুদ্রের নীল গহ্বরে,
আর সেই জোয়ারে ভেসে আসবে
উম্মাহর পুনর্জাগরণের শপথ।
ওয়ালী রাহমানে কবিতা
৩১-০৮-২০২৫
রবিবার।