+8801303535373
No products in the cart.
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থায় বিশ্বাস করে, যেখানে নারীর শালীনতা ও মর্যাদা বিশেষভাবে রক্ষা করা হয়েছে। হিজাব হলো সেই ঐতিহ্যবাহী ও ধর্মীয় পোশাক, যা নারীদের সৌন্দর্য আড়াল করে এবং তাদের ইমান ও চরিত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। আজকের এই আলোচনা হবে ইসলামে হিজাবের গুরুত্ব, তার বিধান, সামাজিক প্রভাব এবং আত্মিক গুরুত্ব নিয়ে।
কুরআনে হিজাবের নির্দেশনা:
কুরআন মজীদ নারীদের জন্য স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তারা নিজেদের সৌন্দর্যের একটি বিশেষ অংশ আড়াল রাখে। বিশেষ করে সূরা আন-নূর আয়াত ৩১-এ আল্লাহতায়ালা বলেছেন:
“এবং তোমাররা তোমাদের খেজুরের মোড়কগুলো তোমাদের গলার ওপর থেকে নামিয়ে পরিধান কর, এবং তোমাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করো না, তবে যা স্বাভাবিক (প্রকাশ) হয়।” (আন-নূর ২৪:৩১)
এই আয়াত থেকে স্পষ্ট হয় যে, নারীদের নির্দিষ্ট অংশ যেমন মাথা, গলা এবং শরীরের বিশেষ অংশগুলো আড়াল রাখার নির্দেশ রয়েছে। এখানে ‘খেজুরের মোড়ক’ অর্থাৎ ওড়না বা স্কার্ফ পরিধান করাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যা আধুনিক দৃষ্টিতে হিজাব হিসেবে পরিচিত।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত হলো সূরা আল-আহজাব (৩৩:৫৯):
“হে নবীর স্ত্রীগণ, বোনগণ এবং মুমিন নারীরা! তোমরা তোমাদের ওপর তোমাদের আবায়া পরিধান করো, যাতে তোমরা চিন্হিত হও এবং তাড়ানো না হও।”
এখানে আবায়া অর্থাৎ বাহিরের পর্দা পরিধান করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যা নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
হাদিসে হিজাবের গুরুত্ব:
প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) হিজাবের গুরুত্ব নিয়ে অনেক বাণী বর্ণনা করেছেন। এক হাদিসে তিনি বলেন:
“নারীরা যেন তাদের গলা ও হাত ছাড়া শরীরের অন্য অংশগুলো আড়াল করে।” (বুখারি, মুসলিম)
আরেকটি হাদিসে নবী (সা.) বলেন:
“যে নারীর হিজাব না থাকে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” (তিরমিজি)
এগুলো থেকে বোঝা যায়, হিজাব কেবল একটি পোশাক নয়, এটি ঈমানের একটি চিহ্ন এবং ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুশাসন।
সামাজিক গুরুত্ব:
হিজাব নারীর সামাজিক মর্যাদা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি নারীদের অপপ্রয়োগ, হয়রানি ও অবাঞ্ছিত দৃষ্টির হাত থেকে সুরক্ষা দেয়। ইসলামী সমাজে হিজাব নারীদের পরিচয় দেয় এবং সুশৃঙ্খল ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত করে।
হিজাবের মাধ্যমে নারী নিজেকে শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয়, বরং একটি আদর্শ মুসলিম নারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। এটি পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
আত্মিক ও মানসিক গুরুত্ব:
হিজাব পরিধান নারীর আত্মবিশ্বাস ও শালীনতা বৃদ্ধি করে। এটি তার নিজেকে সুরক্ষিত এবং আল্লাহর কাছ থেকে সম্মানিত মনে করায়। হিজাব একজন মুসলিম নারীর আত্মিক শান্তি ও ঈমানের দৃঢ়তার প্রতীক।
অনেক নারীর জন্য হিজাব পরা মানে আল্লাহর আদেশ পালন করা, যা তাদের জীবনে নৈতিকতা ও সদাচার বজায় রাখতে উৎসাহিত করে।
আধুনিক সময়ে হিজাব:
আজকের বিশ্বে, হিজাব পরা নারীদের জন্য নতুন ফ্যাশন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিভিন্ন ডিজাইনার ও ব্র্যান্ড আধুনিক ও আরামদায়ক হিজাব নিয়ে আসছেন, যা নারীদের শালীনতার সাথে ফ্যাশনের সমন্বয় ঘটিয়েছে।
জিলদানা ফ্যাশন-এর মতো ব্র্যান্ড উচ্চমানের কাপড় ও নকশায় হিজাব তৈরি করে, যা তরুণ মুসলিম নারীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
উপসংহার:
ইসলামে হিজাবের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি কেবল একজন মুসলিম নারীর পোশাক নয়, বরং তার ঈমান, চরিত্র ও মর্যাদার প্রতীক। কুরআন ও হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে হিজাব পরিধানের বিষয়ে, যা নারীদের শালীনতা, সম্মান ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
আজকের আধুনিক যুগেও হিজাব পরিধান নারীদের জন্য গর্বের বিষয় হওয়া উচিত। এটি নারীদের আত্মবিশ্বাস, নিরাপত্তা ও সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধি করে। তাই প্রত্যেক মুসলিম নারীর উচিত আল্লাহর আদেশ মেনে হিজাব পরিধান করা এবং নিজেদের চরিত্রে শালীনতা ও সৌন্দর্য বজায় রাখা।
2 comments
Rezaul
ব্যবসায় আল্লাহ বারাকাহ দান করুক ভাই।🤲
আলী আহমদAuthor
আমিন